কাশ্মীরে পাক সেনার গুলিতে নিহত নদিয়ার তেহট্টের জওয়ান সুবোধ ঘোষ

Advertisement
Advertisement

স্টিং নিউজ সার্ভিস, তেহট্ট, নদিয়াঃ মাত্র ২৪ বছরেই জীবনের যবনিকা নামল অন্যান্য তিন জওয়ানের মধ্যে নদীয়ার তেহট্টর বাসিন্দা সুবোধ ঘোষ নামে এক সেনা জওয়ানের। আর সেই মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছাতেই পরিবার সহ গোটা গ্রাম শোকস্তব্ধ । দীপান্বিতা উৎসবে আলোর রোশনাইয়ের পরিবর্তে অন্ধকার নেমে এল গ্রাম সহ মৃত জওয়ানের পরিবারে। যার জেরে কালীপুজোর সন্ধ্যায় গ্রামের সমস্ত বাড়িতেই দীপাবলীর আলোর পরিবর্তে নেমে এল আঁধার। শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু আগে মৃত জওয়ান সুবোধ ঘোষের মা বাসন্তী ঘোষের কাছে ফোনে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পৌঁছায়।

Advertisement

শুক্রবার কাশ্মীর উপত্যকায় উরিতে পাকসেনাদের গুলিতে তিন সেনা জাওয়ান এবং বিএসএফ সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে নদীয়ার তেহট্ট মহকুমার রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সেনা জওয়ান সুবোধ ঘোষ। অন্যান্যদের সঙ্গে শহীদ হয়েছেন সেনা জওয়ান সুবোধ ঘোষ। পাঁচজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনশীল ছিল মৃত সেনা জওয়ান সুবোধ।

আজ থেকে বছর চার আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন রঘুনাথপুরের বাসিন্দা সুবোধ ঘোষ। এরই মধ্যে বছর খানেক আগে বিয়েও করেন মৃত সেনা জওয়ান। বাবা , মা ও স্ত্রী অনিন্দিতা ও একটি তিন মাসের সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার। স্থানীয় সূত্রে জানতে পারা যায়, লকডাউনের মধ্যে গত জুলাই মাসে একবার বাড়ি এসেছিলেন সেনা জওয়ান সুবোধ। তারপর আগস্ট মাসে ফিরে গিয়ে সামনের ডিসেম্বরে ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল।

Advertisement

পাক সেনার গুলিতে মৃত্যু হওয়া জওয়ানের একমাত্র কন্যা সন্তানের মুখ আর দেখা হলনা। ছোট্ট তিন মাসের শিশুকন্যাটিও তার বাবাকে আর কোনও দিন দেখতে পাবেনা। শহীদ জওয়ানের বাবা পেশায় ভাগ চাষী গৌরাঙ্গ ঘোষ জানান , তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে। সুবোধ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর সংসারের হাল অনেকটাই ফিরছিল। মাত্র ২৪ বছরের তরতাজা ছেলেকে যে এভাবে হারাতে হবে, আমরা কেউ ভাবতেই পারছিনা।

মা বাসন্তী ঘোষ বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু আগে ফোন করে সুবোধের স্ত্রীর খোঁজ করছিল। তখনও ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেনি। পরে সেনাবাহিনীর তরফে ছেলের মৃত্যুর খবর জানান হয়। এক মাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল বাসন্তী দেবী ও তার পরিবার।

Advertisement

মৃত জওয়ান সুবোধের স্ত্রী অনিন্দিতা ঘোষ জানান, গত বৃহস্পতিবারও দিনভর খোঁজ খবর নিয়েছিল । তারপর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই দুঃসংবাদ এসে পৌঁছায়। কি করে যে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছিনা। একথা বলেই আপন মনে বিড়বিড় করতে লাগলেন অনিন্দিতা দেবী।

Advertisement